প্রিয় ভাই ‘জুতা চোর’
প্রিয় ভাই ‘জুতা চোর’
মাহে রমজানের শুভেচ্ছা। খুশি হয়েছি, অনেক খুশি হয়েছি। রমজানের এত এত ব্যস্ততার পরও তুমি তোমার এই মহান পেশাকে দায়িত্বের সাথে সম্পূর্ণ করেছো। না করেও উপায় নেই, তোমারও ঘর-সংসার আছে, ছেলেপুলে আছে। ঈদে স্ত্রীর জন্য গয়নাগাটি, ছেলে মেয়েদের জন্য নতুন জামা কাপড় কিনতে তো তোমাকেও হবে। আমরা বুঝি, সব বুঝি! তোমাকেও ছয়শ টাকার গরুর গোস্ত, পঞ্চাশ-ষাট টাকার সবজি কিনতে হয়। সব কিছুতো তোমার ওই ইনকামের উপর নির্ভর করে, ঠিক না?
তো ভাইয়া, নিজের পেশাকে কখনো ছোট করে দেখবেনা। জুতা চোর হয়ছো তো কি হয়েছে। তুমি পঁচে যাওনি। এই সমাজে তোমারও স্বীকৃতি আছে, স্ট্যাটাস আছে। তোমাকেও মাথা উঁচু করে বাঁচতে হবে। দেশ ও জাতীর আগামী জুতা চোর গঠনে তোমাকেও ভূমিকা রাখতে হবে।
আমি দুঃখিত যে, তুমি আমার যে জোড়া জুতা নিয়েছো তা একটু পুরাতন হয়ে গিয়েছিলো। তবে পলিশ করে নিলে আবার নতুনের মত চকচক করবে। আর কিছু দিন অপেক্ষা করলে ঈদের নতুন জোরা সহ নিতে পারতে। তুমি চিন্তা করোনা। ওই জোরাও মসজিদের সামনে থেকে দ্বিতীয় কাতারের ডান পাশের বক্সে রাখা থাকবে। তোমার সুবিধে মত নিয়ে যেয়ো। আর মসজিদ থেকে খালি পায়ে আসতেও আমার একটু লজ্জা করেনি! বরং অনেকদিন পর মাটি লাগিয়ে বাসায় আসতে ভালোই লেগেছে। এখনকার সময়ে কাওকে মাটির সাথে সম্পর্ক করিয়ে দেওয়ার কৃতিত্ব একান্ত তোমাদের। জাতি এই জন্য তোমাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
আর তোমার অবিবাহিত কোন মেয়ে থাকলেও তার বায়োডাটা আমাকে দিও। আমার কাছে কিছু পরিচিত জুতা চোর অবিবাহিত পাত্র আছে। তারা নিয়মিত নিউ মার্কেট মসজিদ থেকে জুতা চুরি করে গুলিস্তানে নিয়ে বিক্রি করে। তাদের ইনকামও খারাপ না। তোমার মেয়েকে খাওয়াতে পড়াতে তাদের মোটেও কষ্ট হবেনা। আর তারাও তোমার মত একজন আর্দশবান জুতা চোরের মেয়ে পেয়ে ধন্য হবে।
ধন্যবাদান্তে,
রাশেদুল হায়দার
Leave a Reply